বৃহস্পতিবার, ২৬শে জুন, ২০২৫

নুর উন নবী — নামটি এখন অনেকের কাছেই অপরাধের প্রতীক

 

নুর উন নবী — নামটি এখন অনেকের কাছেই অপরাধের প্রতীক, এলাকায় যিনি অপরাধের রাজত্ব গড়ে তুলেছেন দীর্ঘদিন ধরে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি যেমন দক্ষতার সাথে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংগঠিত করেন, তেমনি চতুরতায় রক্ষা পান আইনের হাত থেকে। সময় বদলায়, সরকার আসে যায়, কিন্তু বদলায় না নুর উন নবীর প্রভাব। বরং প্রতিটি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি খুঁজে নেন নতুন রাজনৈতিক অভিভাবক, যাদের ছায়ায় থেকে রক্ষা পান প্রতিবার।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নুর উন নবীর বিরুদ্ধে রয়েছে জমি দখল, ব্যাংক জালিয়াতি, প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক অপরাধের অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একা নন, বরং তার পাশে সব সময় থাকে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা, যারা তাকে আইনের আওতার বাইরে রাখতে সহায়তা করেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও নুর উন নবী ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার ঘনিষ্ঠ। তার আশ্রয়দাতা হিসেবে ছিলেন আওয়ামী  সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির, লক্ষ্মীপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান কামাল এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর মতো প্রভাবশালী নেতারা। এসব নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করে নুর উন নবী গড়ে তুলেছিলেন তার অপরাধ সাম্রাজ্য।

বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নুর উন নবী আশ্রয় খুঁজেছেন নতুন রাজনৈতিক শক্তির মাঝে। এবার তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। রাজনৈতিক আশ্রয় ও ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে তিনি আবারও সক্রিয় হয়েছেন অপরাধ কর্মকাণ্ডে। যেমন অতীতে আওয়ামী নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে নিজের প্রভাব বিস্তার করতেন, এখন তেমনি বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির সঙ্গেও ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, যেন এক অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার জানান দিচ্ছেন তিনি।

জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, যে আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে ছিল দুর্নীতি ও অপরাধবিরোধী, সেই আন্দোলনের মুখপাত্ররাই কি আজ আশ্রয় দিচ্ছেন নুর উন নবীর মতো অপরাধীদের? যদি তাই হয়, তবে রাজনৈতিক দলগুলোর নৈতিক অবস্থান এবং ভবিষ্যতের নেতৃত্ব নিয়েই সৃষ্টি হয় গভীর শঙ্কা।

জনগণ এখন চায়, যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, কোনো অপরাধীর যেন আশ্রয় না থাকে। তারা চায়, অপরাধের বিরুদ্ধে থাকুক জিরো টলারেন্স, রাজনৈতিক পরিচয়ের উর্দ্ধে উঠে বিচার হোক অপরাধীর। যেন আর কোনো নতুন নুর উন নবী জন্ম না নেয়, এবং একটি সুশাসিত, ন্যায়ের সমাজ প্রতিষ্ঠা হয়।

Facebook
WhatsApp
Email
Pinterest
Telegram