স্টাফ রিপোর্টার: আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা কাদের ইন্দ্রে হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নাকি ইসকনের? এ নিয়ে চট্টগ্রামের জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগের আর্দেশ ক্রমে সদ্য শপথ নেওয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা:শাহাদাত হোসেনের একটি বক্তব্য ইতি মধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও ভাইরাল হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অনেক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে উল্লেখ করে নিরীহ কাউকে গ্রেপ্তার না করার অনুরোধ করেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
গত ২( ডিসেম্বর ২০২৪) সোমবার সকালে নগরীর ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র এই অনুরোধের কথা বলেন।
মেয়র আরও বলেন, ‘তবে আমি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন করপোরেশনের কোনো নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার না হয়, সেটা নজরে রাখতে হবে। আমাদের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের যেসব কর্মচারী দিন–রাত পরিশ্রম করে চট্টগ্রাম নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখছে, তারা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে।’
কিন্ত সদ্য তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে মেয়রের দুই পাশে স্বৈরশাসকে নিয়োগকৃত এবং শেখ হাসিনার দোষর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সিইও শেখ মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ও কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী ও সচিব আশরাফুল আমিনের নির্দেশে গত ১৩ জুলাই হইতে ৪ (আগষ্ট ২০২৪) পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দমন করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিদ্যুতের সার্কিট বন্ধ রেখে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে এবং শত শত আন্দোলনকারীকে গুলি করে পঙ্গুত্ব বরন করেন।
উল্লেখিত ঘটনার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বদলি করা তিন প্রকৌশলীর দুইজনকে পুনরায় ফেরাতে তৎপর হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর সিটি কর্পোরেশনের স্বক্ষরিত একটি সিটি ইস্যু করা হয়েছে।
অপর দিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি কর্পোরেশন থেকে সিটি ইস্যু হওয়ার কথা শুনেছেন জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোল বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বীর চট্টলা টিভির প্রতিনিধিকে বলেন, আন্দোলন চলাকালে মেয়রের নির্দেশে প্রকৌশলী শাহিন উল ইসলাম ও ঝুলন দাস সিটি কর্পোরেশন এলাকায় লাইটিং বন্ধ করে রাখে এবং নানামুখী ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। আন্দোলন-পরবর্তী ছাত্রদের দাবির মুখে সরকার তাদের বদলি করছিল।
গত (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় তাঁর অনুসারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালে আদালতের অদূরে সেবক কলোনির মুখে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে ইসকন নামীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় ২৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে কোতোয়ালি থানায় ৩১ জন নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন। মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিদের দু-একজন বাদে সবাই চসিকের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।