অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি ও যন্ত্রপাতি না থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের শেভরন হাসপাতালের পাচলাইশ শাখায় এক রোগীর ওপর অস্ত্রোপচার চালানো হয়। এতে গুরুতর জটিলতা তৈরি হলে শেষ পর্যন্ত ওই রোগীর মৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রাণ হারানো রোগীর নাম আফসার উদ্দিন। তিনি গত ২৫ জুলাই শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে পায়ের অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সারাদিন হাসপাতালে ঘোরানোর পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে অপারেশন না করে অবশেষে রাতে অস্ত্রোপচার করার জন্যে তাকে অপারেশন রুমে নেওয়া হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই আফসার উদ্দিনের মৃত্যু ঘটে। অপারেশনটি করেন হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স সার্জন ডা. মশিউর রহমান সাগর।
বীর চট্টলা টিভির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, শেভরন হাসপাতালের পাচলাইশ শাখায় অপারেশনের কোনো বৈধ অনুমোদন নেই, এবং সেখানে অজ্ঞান করার যন্ত্র, হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ পর্যালোচনার যন্ত্র, অক্সিজেন পর্যবেক্ষণ, শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখার যন্ত্র এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে ব্যবহৃত জরুরি জীবনরক্ষা যন্ত্রসহ অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অপারেশনের সময় রোগী চিৎকার করছিলেন, যা প্রমাণ করে যে তাকে সঠিকভাবে অজ্ঞান করা হয়নি—চিকিৎসা বিজ্ঞানের নিয়ম ভঙ্গ করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে অপারেশন করা হয়। যদিও ডা. মশিউর রহমান সাগর দাবি করেছেন, রোগীকে অজ্ঞান করা হয়েছিল।
ঘটনার আরও বিস্ফোরক দিক হচ্ছে, ভুক্তভোগীর পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নগদ প্রদান করা হয়, যাতে এই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ না পায়। বীর চট্টলা টিভির হাতে এই অর্থ লেনদেনের কিছু প্রমাণও এসেছে।উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দিতে টাকা প্রদান করায় প্রমানিত হয়ে যে, ডা: মশিউর রহমান সাগর নিজের অপরাধ বুজতে পেরেছেন তাই তার শাস্তি হওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এধরনের অপরাধ করতে না পারে। জনমনে প্রশ্ন টাকা দিয়ে ভুল চিকিৎসার দায় এড়ানো যায় কি?
ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে হাসপাতাল পরিচালক দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট মহল ঘটনাটির স্বচ্ছ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।