চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি তদন্ত আরমান হোসেন বর্তমানে কুতুবদিয়া থানায় কর্মরত আছেন যার নির্যাতন ও অর্থ লিপ্সার কারণে প্রাণ দিতে হলো মাত্র ২০ বছরের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মিনহাজুল ইসলাম রাফিকে—এমন দাবি তার পরিবারের। ঘটনাটি ঘটে গত ২০২৩ সালের ২০শে ডিসেম্বর।
নিহত রাফির বাবা মামুন আহমেদের অভিযোগ, রাফির সঙ্গে এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই তরুণীর করা জিডির ভিত্তিতে তৎকালীন কোতোয়ালী থানার ওসি তদন্ত আরমান হোসেন রাফিকে থানায় ডেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। শুধু তাই নয়, সেদিন সন্ধ্যায় রাফির বাবা–মাকে ফোন করে দুই লাখ টাকা দাবি করেন ওসি। টাকা না দিলে ছেলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক মামলা দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।
অসহায় পরিবার থানায় গিয়ে ছেলের মুক্তি চাইলে ওসি অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান। নিরুপায় হয়ে রাফির বাবা–মা মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনেন, এবং বাকি টাকা তিন দিনের মধ্যে পরিশোধের সময় নেয়। কিন্তু থানায় নির্যাতন ও বাবা–মায়ের অপমান রাফি সহ্য করতে না পেরে বাসায় ফিরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।নিভে যায় পিতা মাতার স্বপ্ন অসহায় হয়ে পড়ে একটি পরিবার।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন রাফির পরিবার। তার বাবা মামুন আহমেদ বলেন—
“আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী ওসি আরমান হোসেন। তার নির্যাতন ও অপমান সহ্য করতে না পেরে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। আমি এই নিষ্ঠুর ওসির বিচার চাই।” তিনি আরও বলেন ছেলের মৃত্যুর পর আমাকে নানাভাবে হুমকি দামকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয় যাতে আমি কোন মামলা না করি। ফলে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ি এবং মামলা করার সুযোগ না পেয়ে এখন ন্যায় বিচারের আশায় মামলা করলাম। এদিকে রাফির আত্মহত্যা ও ওসি আরমানের নিরযাতনের বিয়ষ নিয়ে ২০২৩ সালের ২২শে ডিসেম্বর কালবেলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে উক্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় যে ওসি আরমানের উর্ধতন কর্মকর্তা উক্ত ঘটনা মিমাংসা ও রাফির পরিবারকে ক্ষতিপূরন বাবধ ২ লক্ষ্য টাকা দেওয়ার জন্য ওসি আরমানকে অনুরোধ করে।
এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নিহত রাফির বাবা। মামলার আইনজীবী রিক্ত বুড়ুয়া জানান, এতে দণ্ডবিধির ৩৮৫, ৩০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় কুতুবদিয়া থানার বর্তমান ওসি আরমান হোসেন ও রাফির প্রেমিকা সুমাইয়াকে আসামি করা হয়েছে।
এখন দেখার বিষয়—ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও সত্য উদঘাটনের স্বার্থে আদালত ও পুলিশ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।