আইন আছে, বিচার আছে, শাস্তির ব্যবস্থাও আছে—তবু থেমে নেই নারীর প্রতি নৃ/শং/সতা। প্রতিদিনের খবরে যুক্ত হয় নতুন আরেকটি নাম, নতুন এক আ/র্তনাদ। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলো লক্ষ্মীপুরের রামগতির টুমচর গ্রামের এক কিশোরী। মাত্র ১৪ বছর বয়সে যে নিজ গ্রামে, নিজ মাঠে ছাগল আনতে গিয়ে হায়েনাদের শিকার হলো।
ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার, দুপুর আনুমানিক একটার দিকে। চরগাজী ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ড এলাকার টুমচর গ্রামে ছাগল আনতে গিয়ে এই ভয়াবহ ঘটনার মুখোমুখি হয় কিশোরীটি। অভিযুক্ত তিন যুবক—খায়ের সর্দারের ছেলে জুয়েল (১৮), সোহরাবের ছেলে আজাদ (১৭) ও জসিমের ছেলে রাজু (১৮)। তাদের হিংস্র থাবা থেকে রক্ষা পায়নি কিশোরীর স্বপ্ন, সম্ভ্রম ও মানবতা।
কিশোরী ও তার মা চোখের পানি ধরে রাখতে না পেরে জানালেন, প্রতিবেশী মালেক মিয়ার বাড়ির আড়ায় বেঁধে রাখা ছাগল আনতে গিয়েছিল মেয়েটি। তখনই জুয়েল প্রথমে মুখ চেপে ধরে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়, তার পরে আজাদ ও রাজু একে একে নৃশংসতা চালায়। ভুক্তভোগীর ভাষায়, প্রথমে জুয়েল, পরে রাজু এবং সবশেষে পাহারারত আজাদও তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মেয়েটির মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, ইজ্জতই আমাদের সব। এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নাই।” প্রভাবশালী মহিউদ্দিন ডাক্তার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিচার দেওয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত তিনিও মুখ ফিরিয়ে নেন।
বড় বোনের অভিযোগ, ঘটনার পরে এলাকার প্রভাবশালী চরগাজী ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি আব্দুর রহমান ও তার সহযোগী সাহাব উদ্দীন পরিবারটিকে হুমকি-ধমকি দেয়। তাদের ভয়ে দীর্ঘক্ষণ নীরব থেকেছে পরিবারটি।
তবে বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা সাহস জুগিয়ে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর পুলিশের সহায়তায় ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, রাজু হাসান (১৮) ও শরীফ হোসেন (২৪) নামে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় রামগতি জুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও শোকের ছায়া। মানুষের মুখে একটাই প্রশ্ন—
“আর কত মা হারাবে তার মেয়ে? আর কত কিশোরীর কান্নায় কাঁপবে আমাদের বিবেক?”