চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া ও নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি অপারেটর নিয়োগে আগামী ডিসেম্বরেই চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে লালদিয়া টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য এবং বাকি দুটি টার্মিনাল ২৫ বছরের জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোর হাতে হস্তান্তর করা হবে।
রোববার (১২ অক্টোবর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বলেন, “২০২০ সালে সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন বিষয়ে একটি বিদেশি কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে, তাদের প্রতিবেদন আমরা ছয় মাস আগে পেয়েছি। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী বন্দরের ট্যারিফ সমন্বয় করা হয়েছে।”
সেমিনারে ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি আজম জে চৌধুরী ও বাংলাদেশ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার।
১৯৮৬ সালের পর প্রথমবারের মতো বন্দরের ডলারভিত্তিক ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, নতুন ট্যারিফ কাঠামো চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) চেয়ে বিদেশি অপারেটরদের বেশি সুবিধা দিচ্ছে।
বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইএফসি (ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন) এর আগেই সতর্ক করেছিল, বাংলাদেশের কঠোর ট্যারিফ নীতি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটরদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। তারা পরামর্শ দিয়েছিল ‘নিশ্চিত ট্যারিফ সংস্কার’-এর, যা এখন বাস্তবায়িত হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সরকার বে টার্মিনাল থেকে শুরু করে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত সব নতুন টার্মিনাল বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে।
বর্তমানে সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই) পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনা করছে, আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড শিগগিরই নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে—যা চট্টগ্রাম বন্দরের মোট কনটেইনার পরিবহনের প্রায় ৪০ শতাংশের সমান।
এদিকে ডেনমার্কের শিপিং জায়ান্ট এ.পি. মোলার মায়েরস্ক নজর রেখেছে আইএফসি–প্রস্তুত লালদিয়া টার্মিনাল কনসেশনের দিকে।