লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সদ্য পদত্যাগ করা সাবেক সেক্রেটারী ফারুক হোসাইন নুরনবীর পদত্যাগে বিস্মিত ও মর্মাহত জেলার তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। রাজনীতিতে নৈতিকতা, ত্যাগ ও আদর্শিক দৃঢ়তায় তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যিনি ছাত্র শিবির থেকে শুরু করে জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরে সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করে নেতৃত্বের উচ্চস্থানে পৌঁছেছিলেন।
ফারুক হোসাইন নুরনবী শুধু একজন নেতা নন, ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলার সহনশীল ও দায়িত্বশীল রাজনীতির প্রতিচ্ছবি। তার জীবনে রয়েছে নানা ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি আওয়ামী সরকারের দমন-পীড়ন, মিথ্যা মামলা, কারাবরণ এবং নানামুখী নিপীড়নের শিকার হয়েও আদর্শচ্যুত হননি। আওয়ামী দুঃশাসনের কঠিন সময়েও তিনি কখনও পিছু হটেননি, বরং সংগঠন ও আদর্শের প্রতি আনুগত্য বজায় রেখে রাজনীতির ময়দান অটলভাবে রক্ষা করেছেন।
তাই হঠাৎ করে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে গভীর প্রশ্ন ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, যখন সবকিছু সহ্য করে একে একে সংগঠনের শীর্ষে পৌঁছেছেন, তখন কেন এমন সিদ্ধান্ত? কী এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, যার কারণে তাকে রাজনীতির এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হলো? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, “আজ যদি তিনি পদত্যাগ না করে আগেই সরে যেতেন, তাহলে হয়তো নানা ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এখন হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।”
তাদের মতে, ফারুক হোসাইন নুরনবীর পদত্যাগ শুধু একটি পদ ছাড়ার বিষয় নয়, এটি লক্ষ্মীপুর জেলার রাজনীতিতে এক শূন্যতার সৃষ্টি করেছে যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। সংগঠনের অভ্যন্তরে অনেকেই আশা করছেন, তিনি আবারও সক্রিয়ভাবে নেতৃত্বে ফিরে আসবেন এবং আগের মতোই সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
জানা গেছে, পদত্যাগপত্রে ফারুক হোসাইন নুরনবী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন, তবে বাস্তবে এর পেছনে কোনো সাংগঠনিক চাপ, মতপার্থক্য কিংবা নেতৃত্বে অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ রয়েছে কি না—তা নিয়ে চলছে জোর গুঞ্জন।